সরকারি কর্মচারী বিধিমালা
Published : জানুয়ারি ১২, ২০১৭ at ৬:৪৫ অপরাহ্ণসরকারি বিভিন্ন দপ্তরের অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতা ও কর্মবিমুখতা নিয়ে অনেক আলোচনা-সমালোচনা আছে। দুর্নীতির অভিযোগও বিস্তর।
কিন্তু প্রয়োজনীয় আইন ও বিধিবিধানের অভাবে তাদের বিরুদ্ধে প্রায়ই কোনো ব্যবস্থা নেয়া যায় না। এমনই প্রোপটে সরকার ‘সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা-২০১৭’ প্রণয়নের উদ্যোগ নিয়েছে। এর মধ্যেই বিধিমালার খসড়া প্রণয়ন করে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মতামত নেয়ার পর তা পাঠানো হয়েছে পাবলিক সার্ভিস কমিশনে (পিএসসি)। জানা গেছে, পিএসসির অনুমোদন পাওয়া গেলেই অফিস আদেশ হিসেবে এটি জারি করা হতে পারে। অন্যদিকে এই বিধিমালা নিয়ে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া ল করা গেছে।
সন্ত্রাসবাদ, বিশেষ করে ধর্মভিত্তিক সন্ত্রাসবাদ বা জঙ্গি কর্মকা- আজ সারা দুনিয়ার অন্যতম সমস্যা হয়ে উঠেছে। বাংলাদেশও তার ব্যতিক্রম নয়। অভিযোগ আছে, আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে বাংলাদেশেরও কোনো কোনো সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রয়েছে। আর তার সঙ্গে সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরে সন্ত্রাসীদের অনুপ্রবেশের অভিযোগও রয়েছে। এর আগে তার কিছু প্রমাণও পাওয়া গেছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কিংবা পুলিশ প্রশাসনের কিছু গোপন নির্দেশের ফটোকপিও পাওয়া গেছে সন্ত্রাসীদের আস্তানায়। তাই নিরাপত্তার স্বার্থেই কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরি হয়ে পড়েছে। কিন্তু অনেক েেত্রই বাদ সাধছে প্রয়োজনীয় আইন ও বিধিমালা না থাকার বিষয়টি। গত বছর রাজধানীর শিশু হাসপাতালের চিকিৎসক খন্দকার রোকনউদ্দিনের সপরিবারে নিরুদ্দেশ হওয়ার বিষয়টি বহুল আলোচিত একটি ঘটনা ছিল। তাঁর স্ত্রীও ঢাকার বাইরের একটি কলেজে শিকতা করতেন। তাঁরা কর্মেেত্র অনুপস্থিত থাকলেও বর্তমান বিধিবিধান অনুযায়ী তাঁদের চাকরিচ্যুত করা বেশ সময়সাপে ব্যাপার। নতুন বিধিমালা কার্যকর হলে এমন েেত্র সিদ্ধান্ত গ্রহণ দ্রুততর হবে বলে আশা করা হচ্ছে। খসড়া বিধিমালায় নিয়োজিত তদন্ত কর্মকর্তা বা তদন্ত বোর্ডের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে গণ্য হবে। কারো বিরুদ্ধে জঙ্গিবাদে জড়িত হওয়ার প্রমাণ পাওয়া গেলেই তাকে চাকরিচ্যুত করাসহ অন্যান্য ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাবে। তেমনি অসদাচরণের েেত্রও থাকবে সুনির্দিষ্ট বিধিমালা। পরিবর্তিত প্রোপটে এমন বিধিমালা খুবই জরুরি। তার পরও শঙ্কা থেকেই যায়। ভালো কিছুও অনেক সময়ই ভালো থাকে না। খারাপ লোকের হাতে পড়ে তা খারাপ দিকেই ব্যবহৃত হয়। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কেউ কেউ এরই মধ্যে তেমন আশঙ্কাও ব্যক্ত করেছেন। তাঁরা মনে করেন, এই বিধিমালার কারণে কেউ কেউ কারো কারো ব্যক্তিগত আক্রোশের শিকার হতে পারেন। সরকার দেশের জনগণের নিরাপত্তা বিধান, সেবা প্রদান ও কল্যাণমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রশাসন বা সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু প্রশাসনে অনিয়ম-দুর্নীতি জেঁকে বসলে সরকারের উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন কঠিন হয়ে পড়ে। অন্য কথায় রাষ্ট্র তিগ্রস্ত হয় এবং জনগণ বঞ্চিত হয়। তাই প্রশাসনের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করার জন্য সরকারকে প্রয়োজনীয় বিধিমালা করতেই হবে। কিন্তু তা যেন কোনো নিরীহ কর্মচারীর স্বার্থ ুণœ না করে, সে দিকটিও বিবেচনায় রাখতে হবে।